সততার পুরস্কার
....... সততার পুরস্কার.......
রায়হান ছিল একদম সাধারণ একটি ছেলে। সে পড়াশোনায় খুব ভালো না হলেও তার এক গুণ ছিল—সে খুবই সৎ ও পরিশ্রমী। তার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক, আর মা গৃহিণী। সংসারের অভাব অনটনের মাঝেও রায়হান কখনো অন্যায় পথে পা বাড়ায়নি।
একদিন রায়হান স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তায় একটি মানিব্যাগ কুড়িয়ে পেল। ব্যাগটি খুলে দেখল, ভেতরে বেশ কিছু টাকা আর একটি পরিচয়পত্র রয়েছে। এত টাকা দেখে প্রথমে একটু লোভ হলো, কিন্তু পরক্ষণেই তার মা-বাবার শেখানো নীতি মনে পড়ল—অন্যের জিনিস আত্মসাৎ করা অন্যায়।
দ্রুত পাশের দোকানে গিয়ে দোকানদার কাকাকে সব কথা বলল। কাকা পরিচয়পত্র দেখে বললেন, "এটা তো আমাদের গ্রামেরই রফিক চাচার ব্যাগ!"
রায়হান দেরি না করে রফিক চাচার বাড়ির দিকে রওনা হলো। চাচা তখন চিন্তিতভাবে বাড়ির আঙিনায় পায়চারি করছিলেন। রায়হান গিয়ে বলল, "চাচা, আপনি কি কিছু হারিয়েছেন?"
রফিক চাচা চমকে উঠলেন, "হ্যাঁ, আমার মানিব্যাগ হারিয়ে গেছে। ওতে আমার মাসের পুরো বেতনের টাকা ছিল।"
তখন ব্যাগটি এগিয়ে দিল। চাচা ব্যাগ খুলে সবকিছু দেখে আনন্দে কেঁদে ফেললেন। তিনি বললেন, "বাবা, তুমি আমার আজকের দিনের নায়ক! যদি কেউ এই ব্যাগ পেয়ে লুকিয়ে ফেলত, তাহলে আমি খুব বিপদে পড়তাম।"
রফিক চাচা কৃতজ্ঞতা স্বরূপ রায়হানকে কিছু টাকা দিতে চাইলেন, কিন্তু রায়হান তা নিতে রাজি হলো না। সে হাসিমুখে বলল, "আমি যা করেছি, তা করা আমার দায়িত্ব ছিল। সততাই মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ।"
রফিক চাচা তার সততায় মুগ্ধ হয়ে গ্রামের প্রধান শিক্ষককে জানালেন। স্কুলে রায়হানকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হলো এবং প্রধান শিক্ষক তার জন্য একটি বৃত্তির ব্যবস্থা করলেন।
সততার এই পুরস্কার রায়হানের জীবন বদলে দিল। সে মন দিয়ে পড়াশোনা করল, ভবিষ্যতে বড় হয়ে সৎ ও ন্যায়পরায়ণ একজন মানুষ হলো। তার সততা ও নৈতিকতা একদিন পুরো গ্রামের গর্বের কারণ হয়ে দাঁড়াল।
শিক্ষা: সততা কখনো বৃথা যায় না। সৎ মানুষ সবসময় সম্মানিত হয় এবং তার জীবনে একদিন সফলতা আসে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন